আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই তাদের ভবিষ্যৎ নির্মাণের ভিত্তি স্থাপন হয়ে যায় যখন কোনো শিক্ষার্থী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভ শুরু করে। আর সেই কাজটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পাশাপাশি সমাজ সম্পৃক্ততা জরুরি। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মানোন্নয়ন ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি সমাজের জনগণের অংশগ্রহণ তথা সমাজের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। আমরা স্থানীয় জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনার সাথে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারি। বিদ্যালয় ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেখার জন্য সরকার ও শিক্ষকের পাশাপাশি জনগণের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। স্থানীয় জনগণ যদি নিজ উদ্যোগে বিদ্যালয়ের সমস্যা অসুবিধাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানে উদ্যোগী হন, তাহলে বিদ্যালয়গুলোর গতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া বিদ্যালয়গুলোর উন্নয়ন ও শিক্ষার মানোন্নয়ন শতভাগ সম্ভব নয়। এ দেশে অনেক অভিভাবক রয়েছেন যারা ততটা সচেতন নন। সন্তানকে সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে ভর্তি করান না। তখন সমাজের সচেতন অভিভাবকেরাই তাদের বুঝিয়ে সন্তানদের বিদ্যালয়ে ভর্তি করার ব্যবস্থা করেন। মা-সমাবেশ, অভিভাবক সমাবেশ, উঠোন বৈঠকে তাদের উপস্থিতির মাধ্যমে খুব সহজে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি, ভর্তি, পাঠোন্নতি, ফলাফল বিভিন্ন বিষয় সহজেই তাদের কাছে পৌঁছানো যায় ও সচেতন করা যায়। বিদ্যালয়ের সাথে সমাজের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর ঝরে পড়া রোধ করা সহজ । শিক্ষার্থীদের নিয়মিত হাজিরা প্রদান ও ঝরে পড়া রোধে শিক্ষকদের পাশাপাশি এসএমসি সদস্যরা হোম ভিজিটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি শতভাগ করতে পারেন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সময়মতো বিদ্যালয়ে আগমন, প্রস্থান ও পাঠদান করছেন কি না তা সমাজের সচেতন ব্যক্তিরা দেখতে পারেন। এর মাধ্যমে সময়মতো উপস্থিতি ও পাঠদান নিশ্চিত হতে পারে। অনেক বিদ্যালয়েই শিক্ষক স্বল্পতা রয়েছে। স্থানীয় জনগণ, এসএমসি ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা বিদ্যালয়ের কথা চিন্তা করে প্যারা শিক্ষক নিয়োগ করার মাধ্যমে বিদ্যালয়ের শিক্ষক স্বল্পতা দূর করে শিক্ষার গুণগত মান বাড়িয়ে থাকেন। সরকারি অনুদানের পাশাপাশি স্থানীয় অনুদানের মাধ্যমে বা জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে জনগণ বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন, সংস্কার, মেরামত করতে পারেন। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বার্ষিক বনভোজন, বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল ও বিভিন্ন জাতীয় দিবসে মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী পুরস্কার বিতরণ, শীতকালীন বস্ত্র বিতরণ, পরীক্ষা সংক্রান্ত সামগ্রী বিতরণ করার মাধ্যমে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বৃদ্ধি করা সম্ভব। কাজেই বলা যায়, পারস্পরিক সামাজিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির মাধ্যমেই মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস